গুমের সংস্কৃতির শেষ হওয়া ও জড়িতদের বিচার জরুরি

 


বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশে গুমের সংস্কৃতির অবসান এবং এতে জড়িতদের বিচার করার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যারা গুমের সংস্কৃতি চালু করেছে এবং পরিচালনা করছে, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশের জনগণ জানে কারা গুম ও হত্যার সঙ্গে জড়িত। এই ব্যক্তিরা—জিয়াউল হাসান, বেনজীর আহমেদ, মনিরুল ইসলাম, ডিবি হারুন, বিপ্লব, মেহেদি—তাদের দ্রুত বিচার করা উচিত।’

সোমবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরে গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের দুর্ভোগ নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সালাহউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। ‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের স্মৃতিচারণ ও তাদের পরিবারের দুর্দশার গল্প ফুটে উঠেছে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের দোসরেরা দেশের বিভিন্ন স্থানে দখল করে আছে, তাদের উপস্থিতি বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য কাউকে চাকরির সুপারিশ না করা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কর্মকর্তাদের পদত্যাগের আহ্বান জানানো হয়েছে।

গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের পাশে বিএনপি সবসময় থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘আমরা গুমের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব এবং ভবিষ্যতে যদি এমন কোনো ঘটনা ঘটে, আমরা তাদের পাশে থাকব।’

সালাহউদ্দিন আহমেদ তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘আমি নিজেই গুমের শিকার হয়েছিলাম। গুমের এই নৃশংস সংস্কৃতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে।’ তিনি গুম হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের দুর্দশার প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা যারা এখনও প্রিয়জনদের ফিরে পাননি, তারা জীবন্ত লাশের মতো দিন কাটাচ্ছেন।’

‘মায়ের ডাক’ সংগঠনের উদ্যোগে ‘গুম: জান ও জবান’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়েছে, যা ৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে। আলোকচিত্রী মোশফিকুর রহমানের তোলা ছবিগুলোতে গুম হওয়া পরিবারের বেদনা ও কষ্টের চিত্র ফুটে উঠেছে।

অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এছাড়াও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর সিনিয়র গবেষক তাসকিন পারভীন এবং আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বক্তব্য রাখেন।


Post a Comment

Previous Post Next Post